কালীপ্রসাদ দেশোয়ারা
শ্রীরুপ মহাপ্রভুর আজ্ঞা পালনার্থে বৃন্দাবনে আগমন করলেন মহাপ্রভূর নির্দেশে লপ্ত দীর্থ উদ্বার ও শ্রীবিগ্রহ সেবা প্রকাশ হচ্ছে না দেখে শ্রীরূপ বড়ই চিন্তিত হলেন। বিগ্রহ রুপে গোবিন্দ কোথায় আছেন। বনে বনে গৃহে গৃহে খোঁজ করিতে লাগলেন,কোথাও পেলেন না। একদিন যমুনার তটে বসে বিষন্ন হৃদয়ে ঐ চিন্তায় বিভোর হয়ে আছেন।এমন সময় একজন ব্রজবাসী শ্রীরুপের সন্নিকটে এলেন। ব্রজবাসী অল্পবয়স্ক সুন্দর মূর্তিধারী হাসতে হাসতে বললেন হে স্বামিন! আপনি এত দুঃখিত কেন? শ্রীরুপ গোপকুমারের মধূর সম্ভাষন শুনে প্রাণে বড়ই সন্তোষ লাভ করলেন, তারপর শ্রীরুপ ব্রজবাসীর নিকট মহাপ্রভুর আদেশের কথা বললেন। গোপকুমার বললেন স্বামিন! আমার সঙ্গে চলুন। শ্রীরুপ বললেন-হে গোপকুমার কোথায় যাব। স্বামিন!যে বিগ্রহ সেবা প্রকাশের জন্য আপনি এত চিন্তাযুক্ত সে বাসনা পূর্ণ হবে হে গোপকুমার!আমার আশাপূর্ণ হবে?নিশ্চয় হবে। আসুন আমার সঙ্গে। গোপকুমার শ্রীরুপকে নিয়ে এলেন গোমাটিলায়। বললেন স্বামীন!এ টিলাটিকে প্রতিদিন পূর্বাহ্নে এক গাভী এসে দুগ্ধ ধারায় স্নান করায়ে যান। আপনি আগামী দিবস পূবাহ্নে এখানে এলে সাাৎ দর্শন পাবেন। এ গোমাটিলাতেই বিগ্রহ আছেন। এখন যা উচিত তা করুন আমি চললাম। শ্রীরুপ গোমাটিলাটির দিকে দৃষ্টিপাত করেছিলেন পেছনে ফিরে দেখলেন গোপকুমার অদৃশ্য।ভাবতে লাগলেন কে এ গোপ কুমার?প্রাণের আবাধ্য শ্রীগোবিন্দ। প্রেমে পুলকিত হয়ে শ্রীরুপ সেই গোমাটিলা মহাযোগপীঠস্থলীটি উত্তমরুপে নিরীন করতে লাগলেন। অনন্তর শ্রীরুপ নিজস’ানে ফিরে এলেন। পর দিবস প্রাতে সেই গোমাটিলা দর্শনে এলেন দেখলেন এক অপূর্ব সুরভী তথায় আগমন করে স্খরিত দুগ্ধ ধারায় টিলাটি স্নান করায়ে চলে গেলেন। শ্রীরুপের সম্পূর্ন বিশ্বাস হল ঠাকুর এখানে আছেন। অতপর তিনি গোপ পল্লীতে গিয়ে শ্রেষ্ঠ গোপগনকে একত্রিদ করে এ আখ্যান বললেন। গোপগণ বিবিষ্মায়ান্তিত হয়ে কোদাল কুড়ালদি নিয়ে শীঘ্রই গোমাটিলায় এলেন শ্রীরুপ ও এলেন। টিলার মাটি সামান্য মাত্র অপসারিত করতেই কোটি মদন বিনিন্দিত শ্রী গোবিন্দ মূর্তি দর্শন পেলেন। সকলের আর ও আনন্দের সীমা রইল না, মহানন্দে হরি হরি ধ্বনিতে দশদিক মুখরিত করে তুললেন। পূন: শ্রী গোবিন্দ প্রকট হলেন। শ্রী রুপ প্রেমাশ্র“ স্মরণ েেত্র গোবিন্দ পাদমূলে দন্ডবৎ করে বহস্তব স্তুতি করতে লাগলেন। শীঘ্র এ বার্তা ব্রজের সমস্ত গোস্বামীগণ আনন্দ সিন্ধুতে ভাসতে ভাসতে শ্রীগোবিন্দ পাদপষ্মে উপস্থিত হলেন।
শ্রীগোবিন্দ দেবের প্রকট ধ্বনি হৈতে
উল্লাসে অসংখ্য লোক ধায়চারি ভিতে।
মিশাইয়া মানুষ্যে ব্রহ্মাদি দেবগন
পরম উল্লাসে কারগোবিন্দ দর্শন।
তিলার্ধেক লোকভিড় নিবৃত্ত না হয়।
কোথা হৈতে আইসে কেহ লখিতে না পায়।
গোবিন্দ প্রকট মাত্র শ্রীরুপ গোসাঞ্জি।
েেত্র পত্রী পাটাইলা মহাপ্রভু ঠাঁই।
শ্রীকুষ্ণ চৈতন্য পভূ পার্ষদ সহিতে।
পত্রী পড়ি আনন্দে না পারে স্থির হৈতৈ।
ভেঃ রতœাকর-২/৪৩৩-৪৩৭)
লীলাচনে শ্রীগৌরসুন্দর এ শুভ সংবাদ শ্রবন মাত্রই গোবিন্দের সেবক রুপে শ্রীকাশিশ্বর পন্ডিতকে বৃন্দাবনে পাঠায়ে দিলেন। যে সময় শ্রীরুপ ও সনাতন ব্রজধামে বাস করছিলেন সে সময় ব্রজে ভারতের বিভিন্ন দেশ হতে প্রসিদ্ধ নামাচার্য ভক্তগণ ও সন্যাসীগণ ব্রজধামে বাস করছিলেন, গুজরাট দেশের প্রসিদ্ধ বৈষ্ণবাচার্য শ্রীমদ বল্লবাচার্য ও সে সময় ব্রজধামে বাস করছিলেন। দাণ্যিত্যের প্রসিদ্ধ ত্রিদন্ডি সন্যাসী শ্রী প্রবোধানন্দ স্বরস্বতি ব্রজধামে বাস করছিলেন, বঙ্গদেশের প্রসিদ্ধনামা বূতপূর্ব গৌড়েশ্বর শ্রীসুবুদ্ধি রায়, তিনি ও ব্রজধামে বাস করছিলেন, সেকালে ভারতের প্রসিদ্ধ পন্ডিত ও সন্ন্যাসমীগন ব্রজধামে আগমন করতেন।তারা শ্রীরুপ সনাতন ব্রজ বাসিগনকে সাাত কৃষ্কন পরিকর ঞ্জান করতেন।তাদের সঙ্গে সেইরুপ তাদের ব্যবহার করতেন।তারা শ্রীরুপ ব্যবহারেই বিমুগ্ধ। ব্রজবামিগন সকলেই শ্রীরুপ সনাতনকে আপন বুদিধ করতেন। গৃহের সুখ-দু:খজনক যাবতীয় ব্যবহারিক কথা তাদের কাছে বলতেন ও সদুউপদেশ চাইতেন। ব্রজগৌপীগন তাদের পুত্র প্রায় বোধ করতেন। শ্রীরুপ ও সনাতন ব্রজের স্থানে থাকতেন। কিন্তু দুই ভাই একসঙ্গে থাকতেন না। শ্রী সনাতন মহাবনে গোকুল মহাবনে; শ্রীরুপ মথুরায় বা বৃন্দাবনে নন্দগাটা দিতে তাকতেন। এদের সঙ্গী ছিলেন শ্রী লোকনাত গোস্বামী শ্রী ভট্র গোস্বামী শ্রীরঘুনাথ দাস গোস্বামী। শ্রীলগোপাল ভট্র গোস্বামী ও শ্রীরঘুনাথ ভট্র গোস্বামী, শ্রীরুঘুনাথ দাস গোস্বামী, শ্রীল গোপাল ভট্র গোস্বামী ও শ্রীরঘুনাথ ভট্র গোস্বামী প্রভৃতি। যেমন শ্রীরুপের কাছে শ্রীগোবিন্দ দেব প্রকট হলেন। তেমনি শ্রীসনাতনের কাছে শ্রীমদন গোপাল প্রকট হলেন। তেমনি শ্রীসনাতনের কাছে শ্রীমদন গোপাল প্রকট হলেন। শ্রীগোপাল ভট্রের কাছে শ্রীবাধা রমন ও শ্রীমধু পন্ডিতের কাছে শ্রীগোপিনাথ প্রকটিত হলেন। যুগপৎ বহু ঠাকুর প্রকটিত হলেন। কৃষ্ণ পুন: ব্রজে নিত্য বিহার লীলা করতে লাগলেন। মহাপ্রভু নির্দেশমত শ্রীরুপ মনাতন গ্রন্থ লিখন কর্ম্মে নিযুক্ত আছেন শ্রীরুপ। বিদগ্ধ মাধব, নাটক, ললিত মাধব নাটক আর অন্যান্যগ্রন্ত লেখার পর শ্রীভক্তির সামৃত সিন্ধু গ্রন্থ আরম্ভ করলেন। এই সময় একদিন শ্রীবল্লভাচার্য শ্রীরুপের সন্নিধানে আগমন করলেন। শ্রীরুপ তাকে দন্ডবৎ প্রভৃতি করে বসতে আসন দিলেন। দুই জনে কিছুন ইষ্টগোষ্ঠী করলেন। অনন্তর শ্রীরুপ ভক্তি রসামৃতের প্রথম বন্দনা শ্লোকটি বল্লবাচার্যের হাতে পড়তে দিলেন। তিনি অনেক সময় দেখার পর বললেন- কোন কোন স্থানে অশুদ্ধি আছে। এ সময় শ্রীরুপের ছোট ভাই শ্রীঅনুপমের পূত্র শ্রীজীব গোস্বামী অল্প দিন হল বঙ্গদেশ থেকে এসেছেন। তিনি শ্রীরুপের অঙ্গে বাতাস করছিলেন। তিনি ন্যায় বেদান্তাদিশাস্ত্রে পরম পন্ডিত ছিলেন। শ্রী বল্লবাচার্যের কথায় তিনি সুখী হলেন না। শ্রীবল্লবাচার্য যখন যমুনায় স্নান করতে এলেন এবং শ্লোকে কোথায় অশুদ্ধি আছে জিজ্ঞাসা করলেন। শ্রীজীবের পান্ডিত্য প্রতিভা দেখে বলালবাচার্য আশ্চার্য্যান্বিত জলেন। কিছুন শ্রীজীব বল্লবাচার্যের সঙ্গে শ্লোক বিচারের পর জল নিয়ে কুঠিরে ফিরে এলেন। অল্পন পরে শ্রীবল্লভাচার্য এলেন, শ্রীরুপকে ঐ বালকটির কথা জিজ্ঞাসা করলেন এবং তার বিদ্যা প্রতিভার প্রশংসা করলেন। শ্রীবল্লভাচার্য নিজ স্থানে চলে যাবার পর শ্রীজীবকে শ্রীরুপ গোস্বামী আহ্বান করলেন এবং বললেন- আমরাযাদের গুরুজ্ঘান করে দন্ডবৎ প্রনামাদি করি তাদের তুমি দোষ বিচার করতে চাও, ইহা অশিষ্টাচার। আমার হিতের জন্য তিনি আমাকে এমন কথা বলেছিলেন-তুমি ইহা সহন করতে পারলে না। এ অতি অল্প বাক্য সহিতে নারিলা। তাহে পূর্ব্ব দেশ শীঘ্র করহ গমন
মন স্থির হইল আসিবা বৃন্দাবন।
একথা বলে শ্রীরুপ জীবকে গৃহে যাবার আদেশ দিলেন। শ্রীরুপের আজ্ঞায় শ্রীজীব পূর্ব দিকে চলতে মনস্থ করলেন। শ্রীরুপের কুটির থেকে বাহির হলেন এবং শ্রীনন্দ রাজের কোন এক জীর্ন মন্দির নিরাহারে পড়ে রহিলেন এবং দুঃখে ক্রন্দন করতে লাগলেন। গ্রামের লোকজন ঐ সুন্দর বালকের নিরাহারে খেদ করতে দেখে সকলেই চিন্তান্বিত হলেন। এমন সময় তথায় শ্রীসনাতন গোস্বামী এলেন। তার কাছে সকলে ঐ বালকের কথা বললেন। তিনি তথায় গিয়ে দেখলেন শ্রীজীব পড়ে আছে। নিরাহারে শরীর শুকাইয়া গেছে, তাকে এমন অবস্থায় দেখে অত্যন্ত করুনাদ্র হৃদয়ে ভূমি থেকে উটায়ে স্নেহ করতে লাগলেন এবং সবকথা জিজ্ঞাসা করলেন, শ্রী জীব সব কথা বললেন। শ্রীসনাতন জীবকে অনেক প্রবোধ বাক্য বলে শ্রীরুপের কাছে গেলেন। শ্রীরুপ কথা প্রসঙ্গে জীবের কথা উটালেন, তখন শ্রীসনাতন জীবের কথা বলেন। তচ্ছ্রু বনে শ্রীরুপ শীঘ্রই জীবকে নিয়ে এলেন।
শ্রীজীবের দশা দেখি শ্রীরুপ গোসাঁই
করিলেন শুশ্রƒষা কৃপায় সীমা নেই।
শ্রীরুপ গোস্বামী শ্রীজীবকে অতিশয় তাদের পূর্বক শুশ্রƒষাদি করতে লাগলেন, শ্রীজীব সুস্থ হলেন এবার তার লিখিত সমস্ত গ্রন্থের সংশোধন করবার ভার দিলেন।
শ্রীরুপ যেমন শিশু শ্রীজীবকে কঠোর শাসন করেছেন। আবার তেমনি অতিশয় স্নেহ করেছেন। সদশিষ্যের ও সদগুরুর আদর্শ তারা জগতে প্রদর্শন করলেন।
শ্রীরুপ মহাপ্রভুর আজ্ঞা পালনার্থে বৃন্দাবনে আগমন করলেন মহাপ্রভূর নির্দেশে লপ্ত দীর্থ উদ্বার ও শ্রীবিগ্রহ সেবা প্রকাশ হচ্ছে না দেখে শ্রীরূপ বড়ই চিন্তিত হলেন। বিগ্রহ রুপে গোবিন্দ কোথায় আছেন। বনে বনে গৃহে গৃহে খোঁজ করিতে লাগলেন,কোথাও পেলেন না। একদিন যমুনার তটে বসে বিষন্ন হৃদয়ে ঐ চিন্তায় বিভোর হয়ে আছেন।এমন সময় একজন ব্রজবাসী শ্রীরুপের সন্নিকটে এলেন। ব্রজবাসী অল্পবয়স্ক সুন্দর মূর্তিধারী হাসতে হাসতে বললেন হে স্বামিন! আপনি এত দুঃখিত কেন? শ্রীরুপ গোপকুমারের মধূর সম্ভাষন শুনে প্রাণে বড়ই সন্তোষ লাভ করলেন, তারপর শ্রীরুপ ব্রজবাসীর নিকট মহাপ্রভুর আদেশের কথা বললেন। গোপকুমার বললেন স্বামিন! আমার সঙ্গে চলুন। শ্রীরুপ বললেন-হে গোপকুমার কোথায় যাব। স্বামিন!যে বিগ্রহ সেবা প্রকাশের জন্য আপনি এত চিন্তাযুক্ত সে বাসনা পূর্ণ হবে হে গোপকুমার!আমার আশাপূর্ণ হবে?নিশ্চয় হবে। আসুন আমার সঙ্গে। গোপকুমার শ্রীরুপকে নিয়ে এলেন গোমাটিলায়। বললেন স্বামীন!এ টিলাটিকে প্রতিদিন পূর্বাহ্নে এক গাভী এসে দুগ্ধ ধারায় স্নান করায়ে যান। আপনি আগামী দিবস পূবাহ্নে এখানে এলে সাাৎ দর্শন পাবেন। এ গোমাটিলাতেই বিগ্রহ আছেন। এখন যা উচিত তা করুন আমি চললাম। শ্রীরুপ গোমাটিলাটির দিকে দৃষ্টিপাত করেছিলেন পেছনে ফিরে দেখলেন গোপকুমার অদৃশ্য।ভাবতে লাগলেন কে এ গোপ কুমার?প্রাণের আবাধ্য শ্রীগোবিন্দ। প্রেমে পুলকিত হয়ে শ্রীরুপ সেই গোমাটিলা মহাযোগপীঠস্থলীটি উত্তমরুপে নিরীন করতে লাগলেন। অনন্তর শ্রীরুপ নিজস’ানে ফিরে এলেন। পর দিবস প্রাতে সেই গোমাটিলা দর্শনে এলেন দেখলেন এক অপূর্ব সুরভী তথায় আগমন করে স্খরিত দুগ্ধ ধারায় টিলাটি স্নান করায়ে চলে গেলেন। শ্রীরুপের সম্পূর্ন বিশ্বাস হল ঠাকুর এখানে আছেন। অতপর তিনি গোপ পল্লীতে গিয়ে শ্রেষ্ঠ গোপগনকে একত্রিদ করে এ আখ্যান বললেন। গোপগণ বিবিষ্মায়ান্তিত হয়ে কোদাল কুড়ালদি নিয়ে শীঘ্রই গোমাটিলায় এলেন শ্রীরুপ ও এলেন। টিলার মাটি সামান্য মাত্র অপসারিত করতেই কোটি মদন বিনিন্দিত শ্রী গোবিন্দ মূর্তি দর্শন পেলেন। সকলের আর ও আনন্দের সীমা রইল না, মহানন্দে হরি হরি ধ্বনিতে দশদিক মুখরিত করে তুললেন। পূন: শ্রী গোবিন্দ প্রকট হলেন। শ্রী রুপ প্রেমাশ্র“ স্মরণ েেত্র গোবিন্দ পাদমূলে দন্ডবৎ করে বহস্তব স্তুতি করতে লাগলেন। শীঘ্র এ বার্তা ব্রজের সমস্ত গোস্বামীগণ আনন্দ সিন্ধুতে ভাসতে ভাসতে শ্রীগোবিন্দ পাদপষ্মে উপস্থিত হলেন।
শ্রীগোবিন্দ দেবের প্রকট ধ্বনি হৈতে
উল্লাসে অসংখ্য লোক ধায়চারি ভিতে।
মিশাইয়া মানুষ্যে ব্রহ্মাদি দেবগন
পরম উল্লাসে কারগোবিন্দ দর্শন।
তিলার্ধেক লোকভিড় নিবৃত্ত না হয়।
কোথা হৈতে আইসে কেহ লখিতে না পায়।
গোবিন্দ প্রকট মাত্র শ্রীরুপ গোসাঞ্জি।
েেত্র পত্রী পাটাইলা মহাপ্রভু ঠাঁই।
শ্রীকুষ্ণ চৈতন্য পভূ পার্ষদ সহিতে।
পত্রী পড়ি আনন্দে না পারে স্থির হৈতৈ।
ভেঃ রতœাকর-২/৪৩৩-৪৩৭)
লীলাচনে শ্রীগৌরসুন্দর এ শুভ সংবাদ শ্রবন মাত্রই গোবিন্দের সেবক রুপে শ্রীকাশিশ্বর পন্ডিতকে বৃন্দাবনে পাঠায়ে দিলেন। যে সময় শ্রীরুপ ও সনাতন ব্রজধামে বাস করছিলেন সে সময় ব্রজে ভারতের বিভিন্ন দেশ হতে প্রসিদ্ধ নামাচার্য ভক্তগণ ও সন্যাসীগণ ব্রজধামে বাস করছিলেন, গুজরাট দেশের প্রসিদ্ধ বৈষ্ণবাচার্য শ্রীমদ বল্লবাচার্য ও সে সময় ব্রজধামে বাস করছিলেন। দাণ্যিত্যের প্রসিদ্ধ ত্রিদন্ডি সন্যাসী শ্রী প্রবোধানন্দ স্বরস্বতি ব্রজধামে বাস করছিলেন, বঙ্গদেশের প্রসিদ্ধনামা বূতপূর্ব গৌড়েশ্বর শ্রীসুবুদ্ধি রায়, তিনি ও ব্রজধামে বাস করছিলেন, সেকালে ভারতের প্রসিদ্ধ পন্ডিত ও সন্ন্যাসমীগন ব্রজধামে আগমন করতেন।তারা শ্রীরুপ সনাতন ব্রজ বাসিগনকে সাাত কৃষ্কন পরিকর ঞ্জান করতেন।তাদের সঙ্গে সেইরুপ তাদের ব্যবহার করতেন।তারা শ্রীরুপ ব্যবহারেই বিমুগ্ধ। ব্রজবামিগন সকলেই শ্রীরুপ সনাতনকে আপন বুদিধ করতেন। গৃহের সুখ-দু:খজনক যাবতীয় ব্যবহারিক কথা তাদের কাছে বলতেন ও সদুউপদেশ চাইতেন। ব্রজগৌপীগন তাদের পুত্র প্রায় বোধ করতেন। শ্রীরুপ ও সনাতন ব্রজের স্থানে থাকতেন। কিন্তু দুই ভাই একসঙ্গে থাকতেন না। শ্রী সনাতন মহাবনে গোকুল মহাবনে; শ্রীরুপ মথুরায় বা বৃন্দাবনে নন্দগাটা দিতে তাকতেন। এদের সঙ্গী ছিলেন শ্রী লোকনাত গোস্বামী শ্রী ভট্র গোস্বামী শ্রীরঘুনাথ দাস গোস্বামী। শ্রীলগোপাল ভট্র গোস্বামী ও শ্রীরঘুনাথ ভট্র গোস্বামী, শ্রীরুঘুনাথ দাস গোস্বামী, শ্রীল গোপাল ভট্র গোস্বামী ও শ্রীরঘুনাথ ভট্র গোস্বামী প্রভৃতি। যেমন শ্রীরুপের কাছে শ্রীগোবিন্দ দেব প্রকট হলেন। তেমনি শ্রীসনাতনের কাছে শ্রীমদন গোপাল প্রকট হলেন। তেমনি শ্রীসনাতনের কাছে শ্রীমদন গোপাল প্রকট হলেন। শ্রীগোপাল ভট্রের কাছে শ্রীবাধা রমন ও শ্রীমধু পন্ডিতের কাছে শ্রীগোপিনাথ প্রকটিত হলেন। যুগপৎ বহু ঠাকুর প্রকটিত হলেন। কৃষ্ণ পুন: ব্রজে নিত্য বিহার লীলা করতে লাগলেন। মহাপ্রভু নির্দেশমত শ্রীরুপ মনাতন গ্রন্থ লিখন কর্ম্মে নিযুক্ত আছেন শ্রীরুপ। বিদগ্ধ মাধব, নাটক, ললিত মাধব নাটক আর অন্যান্যগ্রন্ত লেখার পর শ্রীভক্তির সামৃত সিন্ধু গ্রন্থ আরম্ভ করলেন। এই সময় একদিন শ্রীবল্লভাচার্য শ্রীরুপের সন্নিধানে আগমন করলেন। শ্রীরুপ তাকে দন্ডবৎ প্রভৃতি করে বসতে আসন দিলেন। দুই জনে কিছুন ইষ্টগোষ্ঠী করলেন। অনন্তর শ্রীরুপ ভক্তি রসামৃতের প্রথম বন্দনা শ্লোকটি বল্লবাচার্যের হাতে পড়তে দিলেন। তিনি অনেক সময় দেখার পর বললেন- কোন কোন স্থানে অশুদ্ধি আছে। এ সময় শ্রীরুপের ছোট ভাই শ্রীঅনুপমের পূত্র শ্রীজীব গোস্বামী অল্প দিন হল বঙ্গদেশ থেকে এসেছেন। তিনি শ্রীরুপের অঙ্গে বাতাস করছিলেন। তিনি ন্যায় বেদান্তাদিশাস্ত্রে পরম পন্ডিত ছিলেন। শ্রী বল্লবাচার্যের কথায় তিনি সুখী হলেন না। শ্রীবল্লবাচার্য যখন যমুনায় স্নান করতে এলেন এবং শ্লোকে কোথায় অশুদ্ধি আছে জিজ্ঞাসা করলেন। শ্রীজীবের পান্ডিত্য প্রতিভা দেখে বলালবাচার্য আশ্চার্য্যান্বিত জলেন। কিছুন শ্রীজীব বল্লবাচার্যের সঙ্গে শ্লোক বিচারের পর জল নিয়ে কুঠিরে ফিরে এলেন। অল্পন পরে শ্রীবল্লভাচার্য এলেন, শ্রীরুপকে ঐ বালকটির কথা জিজ্ঞাসা করলেন এবং তার বিদ্যা প্রতিভার প্রশংসা করলেন। শ্রীবল্লভাচার্য নিজ স্থানে চলে যাবার পর শ্রীজীবকে শ্রীরুপ গোস্বামী আহ্বান করলেন এবং বললেন- আমরাযাদের গুরুজ্ঘান করে দন্ডবৎ প্রনামাদি করি তাদের তুমি দোষ বিচার করতে চাও, ইহা অশিষ্টাচার। আমার হিতের জন্য তিনি আমাকে এমন কথা বলেছিলেন-তুমি ইহা সহন করতে পারলে না। এ অতি অল্প বাক্য সহিতে নারিলা। তাহে পূর্ব্ব দেশ শীঘ্র করহ গমন
মন স্থির হইল আসিবা বৃন্দাবন।
একথা বলে শ্রীরুপ জীবকে গৃহে যাবার আদেশ দিলেন। শ্রীরুপের আজ্ঞায় শ্রীজীব পূর্ব দিকে চলতে মনস্থ করলেন। শ্রীরুপের কুটির থেকে বাহির হলেন এবং শ্রীনন্দ রাজের কোন এক জীর্ন মন্দির নিরাহারে পড়ে রহিলেন এবং দুঃখে ক্রন্দন করতে লাগলেন। গ্রামের লোকজন ঐ সুন্দর বালকের নিরাহারে খেদ করতে দেখে সকলেই চিন্তান্বিত হলেন। এমন সময় তথায় শ্রীসনাতন গোস্বামী এলেন। তার কাছে সকলে ঐ বালকের কথা বললেন। তিনি তথায় গিয়ে দেখলেন শ্রীজীব পড়ে আছে। নিরাহারে শরীর শুকাইয়া গেছে, তাকে এমন অবস্থায় দেখে অত্যন্ত করুনাদ্র হৃদয়ে ভূমি থেকে উটায়ে স্নেহ করতে লাগলেন এবং সবকথা জিজ্ঞাসা করলেন, শ্রী জীব সব কথা বললেন। শ্রীসনাতন জীবকে অনেক প্রবোধ বাক্য বলে শ্রীরুপের কাছে গেলেন। শ্রীরুপ কথা প্রসঙ্গে জীবের কথা উটালেন, তখন শ্রীসনাতন জীবের কথা বলেন। তচ্ছ্রু বনে শ্রীরুপ শীঘ্রই জীবকে নিয়ে এলেন।
শ্রীজীবের দশা দেখি শ্রীরুপ গোসাঁই
করিলেন শুশ্রƒষা কৃপায় সীমা নেই।
শ্রীরুপ গোস্বামী শ্রীজীবকে অতিশয় তাদের পূর্বক শুশ্রƒষাদি করতে লাগলেন, শ্রীজীব সুস্থ হলেন এবার তার লিখিত সমস্ত গ্রন্থের সংশোধন করবার ভার দিলেন।
শ্রীরুপ যেমন শিশু শ্রীজীবকে কঠোর শাসন করেছেন। আবার তেমনি অতিশয় স্নেহ করেছেন। সদশিষ্যের ও সদগুরুর আদর্শ তারা জগতে প্রদর্শন করলেন।
0 comments:
Post a Comment